Ads

গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম কেন করবেন?

গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম
গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম
গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রামের কথা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে মনিটরের পর্দায় ভেসে ওঠে গর্ভবতী মায়ের অনাগত বাচ্চার ছবি। আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে চিকিৎসক স্ক্রিনের ছবি বিশ্লেষণ করে রোগ নির্ণয় করে থাকেন। আল্ট্রাসনোগ্রাফি মূলত গর্ভকালীন সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারি পরীক্ষা।


স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় ন্যূনতম দুবার আল্ট্রাসনো করা উচিত। গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না তা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় আছে। আবার কখন করতে হবে এটা নিয়েও নানা কথা আছে।


কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, ক্লিনিক্যালি স্বাভাবিক গর্ভাবস্থার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা জরুরি নয়। তবে এমন কিছু জটিলতা আছে, যা সঠিকভাবে নিরূপণ করতে গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম জরুরি। যা শুধু শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে সেটি নির্ণয় করা সম্ভব নয়।


তাদের মতে, স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় ন্যূনতম দুবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা উচিত। কিন্তু গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করা যেমন ভাল, আবার অসময়ে বার বার না করাও শ্রেয়।


নির্ধারিত দুটি সময়সীমায় আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষাটি করাই ভালো। সময় দুটি হলো- গর্ভাবস্থার ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে (শেষ মাসিকের দিন থেকে) ও গর্ভাবস্থার ৩২-৩৬ সপ্তাহের মধ্যে। এ ছাড়া বিশেষ ক্ষেত্রে ১৮ সপ্তাহের আগে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা গুরুত্বপূর্ণ।

১৮-২২ সপ্তাহ: ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে যে বিষয়গুলো জানা যায় তা হল- এই গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করার মাধ্যমে ভ্রূণের সঠিক বয়স নির্ণয় করা যায়। জরায়ুতে একটপিক ভ্রূণের অবস্থান আছে কিনা জানা যায়। গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করার মাধ্যমে শিশুর শারীরিক জটিলতা বা বিকলাঙ্গতা নির্ণয় করা যায়।


এসময়টিতে জরায়ুতে ফুলের অবস্থান এবং তা মায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কিনা জানা যায়। পাশাপাশি জরায়ুতে টিউমার বা অন্য কোনো জটিলতা আছে কিনা বা থাকলে প্রসবে জটিলতা সৃষ্টি করবে কিনা তা জানা যায়।


৩২-৩৬ সপ্তাহ: আর ৩২ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে যদি গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করা যায় তাহলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনি জানতে পারবেন। এর মধ্যে জানতে পারবেন শিশুর বৃদ্ধি জটিলতা আছে কিনা, শিশুর বিকলাঙ্গতা নিরূপণ করা যায়, যা প্রথম গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম নির্ণয় হয় না।


গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে গর্ভের শিশুর প্রকৃত অবস্থান নির্ণয় করা যায়। জরায়ুর সঠিক অবস্থান, জরায়ুর পানির পরিমাপ করা যায়। তাছাড়া অন্যান্য জটিলতা, যেমন ফাইব্রয়েড, ওভারিয়ান টিউমার ইত্যাদি নিরূপণ করা যায়।


১৮ সপ্তাহ: গর্ভাবস্থার ১৮ সপ্তাহের আগে যদি গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয় তাহলে যে বিষয়গুলো আপনি জানতে পারবেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে গর্ভের সঠিক বয়স নির্ণয় করা যায়, ভ্রূণের সঠিক অবস্থান নির্ণয় হয়। যেমন জরায়ুর ভেতরে না বাইরে (এক্টোপিক প্রেগনেন্সি) ।


আবার এই সময়টাতে আল্ট্রসনোগ্রাফি করলে ভ্রূণের সংখ্যা নির্ণয় হয় (এক বা একাধিক), মোলার প্রেগন্যান্সি যাচাই করা যায়। তলপেটে গর্ভধারণের মতো উপসর্গ প্রকাশ করে তা চিহ্নিত হয়। শিশুর সঠিক বৃদ্ধি বা স্বাভাবিক প্রসবের অন্তরাল ইত্যাদি চিহ্নিত করা হয়।


গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম এমন একটি পরীক্ষা, যা উৎকৃষ্ট পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে সুস্থ শিশু জন্ম দেয়া যায়। গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষাটি সঠিক সময়ে, সঠিক পদ্ধতিতে করার মাধ্যমে শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানো যায়।


গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম কতবার করাবেন?

কতবার আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করা যায়? যেহেতু এর (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) ক্ষতিকারক দিক নেই তাই মা ও শিশুর কোন অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে যতবার এচ্ছা ততবারই করা যায়। এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তবে, এই (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) পরীক্ষা কিছুটা ব্যয়বহুল অনেকের জন্য। এছাড়া মা এবং শিশুর সব সিমটম যদি স্বাভাবিক থাকে তবে দুই থেকে তিনবারের বেশি আলট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম)  করার প্রয়োজন নেই। এর সম্পর্কে কিছু যানা যাক:


১) সেক্ষেত্রে গর্ভের সময়কাল ও প্রসবের সঠিক সময় বের করার জন্য সন্তান ধারণের ৭ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করা হয়।


২) ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করা হয়। এসময় আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করলে বাচ্চার জন্মগত কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা জানা যায়। গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে এটাও জানা যায়।


৩) বাচ্চার ওজন বাড়ছে কিনা জানতে তৃতীয়বার ৩০ থেকে ৩৮ সপ্তাহে আলট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করার পরামর্শ দেয়া হয়। জন্মের সময় বাচ্চার পজিশন সহ অন্য বিষয়গুলো সব ঠিকভাবে আছে কিনা জানা যায়।


৪) হাসপাতালভেদে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে সাদাকালো ৫০০ থেকে ১০০০ এবং কালার করতে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ হয়।


৫) মনে রাখতে হবে, প্রতিটি নারীর জীবনে পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে গর্ভাবস্থার পুরো সময়টা উপভোগ করুন। অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।


গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করা কি ঠিক বা কতটা নিরাপদ?

প্রথমেই জেনে রাখা ভালো, আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের ক্ষতি করে না। অনেকেই মনে করেন, আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) থেকে কোনো তেজস্ক্রিয় রশ্মি শিশুর ক্ষতি করে। কিন্তু! আসলে এটা (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) এক্স-রে নয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) হচ্ছে অতি উচ্চ কম্পন সম্পন্ন শব্দ তরঙ্গ, যা সাধারণ শ্রবণ ক্ষমতার বাইরে।


একজন নারী সঠিকভাবে গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপ পার করছেন কিনা, গর্ভের শিশু সুস্থ আছে কিনা, এই সব কিছুই জানা সম্ভব আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করার মাধ্যমে। এক্ষত্রে যদি গর্ভের শিশু বা মায়ের কোনো বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তাও বোঝা সম্ভব। আর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া যায়।


গর্ভাবস্থায় প্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম (প্রেগ্ন্যান্সি প্রোফাইল) কখন, কেন করাবেন?

অধিকাংশ চিকিৎসক গর্ভাবস্থার ৬ থেকে ৯ সপ্তাহের মধ্যে প্রথম প্রেগ্ন্যাসি প্রোফাইল (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করতে বলেন। ভ্রূণের প্রথম হৃদস্পন্দন ৫ থেকে ৬ সপ্তাহে সনাক্ত করা যায়।


এই সময়ে নিন্মুক্ত কারণে আল্ট্রাসনোগ্রাম (গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম) করা প্রয়োজনঃ

* গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করার জন্য।

* ভ্রূণের হৃদস্পন্দন (হার্টবিট) জানতে

* শিশুর গর্ভকালীন বয়স অর্থাৎ বাচ্চা প্রসবের সময বের করা

* গর্ভে সিঙ্গেল বেবি না অকাধিক বেবি আছে তা যানা যায়


* এক্টোপিক (বাচ্চার অব্স্থান) গর্ভাবস্থা নির্ণয় করা যায়

* ভ্রূণের কোনও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির হচ্ছে কি না, তা যানা যায়

* মোলার প্রেগন্যান্সি, ফেনটম প্রেগন্যান্সি (pseudocyesis) ইত্যাদির সম্ভাবনা বাতিল করতে।

* ইনকমপ্লিট গর্ভপাত (incomplete abortion), মিসড এবরশন (missed abortion) নির্ণয় করতে।


সঠিক সময়ে সঠিক সেবা নিন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Read More...
Anomaly scan during pregnancy
How to reduce sugar level home remedies
মাঙ্কিপক্স কি?
গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম
টিকটক এর ক্ষতিকর দিক

Post a Comment

Previous Post Next Post